এক প্রবাসির কষ্ট ময় জীবন ১০৮
সৌদি থাকাকালীন আবদুন নামে এক মিসৌরীয় আমাদের সাথে কাজ করতো।
পেশায় গাড়ি চালক।
আমরা অনেকদিন একই রুমে থেকেছি।
মাঝে মাঝে কোন বিষয় নিয়ে আমার উপর মন খারাপ করলেও তা বেশী দীর্ঘস্থায়ী হতো না।
আমি বদলি হয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার পর সপ্তাহে একদিন হলেও আমার ঐ জায়গায় যেতো।
সত্তরের কাছাকাছি বয়সের আবদুন যৌবন বয়স থেকেই মিশরের বাইরে কাজ করেছে।
২/৩ বছর পরপর ৪/৫ মাসের জন্য মিশর গেছে।
ইসরাইল কুয়েত কাটিয়ে সৌদি এসে ঘাঁটি গেরেছে তাও বহুদিন হলো।
লোকটার শরীরে ডায়বেটিকস সহ অনেক রোগ বাসা বেঁধেছিলো।চোখের ও সমস্যা ছিলো।
আমরা ওকে মজা করে বলতাম তোর তো ডেট শেষ হয়ে গেছে আবদুন।
একদিন তার সাথে গিয়েছি হুোম ডেলিভারী দিতে।
দেখি আবদুন রাস্তা ছেড়ে গাড়ি নামিয়ে রাস্তার পাশে রাখা পাথরের দিকে যাচ্ছে।
কি করছিস আবদুন, আমার কথা শুনে গাড়ি থামালো।
দুজনে গাড়ি থেকে নামলাম।
ও বলে উঠলো ” ওআল্লাহে শরীফ আনা তারিখ খালাছ বাংলা অর্থ শরীফ( শিপুল) আসলেও আমার ডেট শেষ
হয়ে গেছে।।
আমরা বলতাম, আবদুন তুই বাড়ি যা। তোর তো একছেলে চাকরি করে আর একটার পড়াশুনা শেষের পর্যায়ে।।
ছেলের কম্পিউটার কিনে দিতে হবে এ করতে হবে ও করতে হবে।
হ্যাঁ! ওর আর বাড়ি যাওয়া হয়ে উঠলো না।
আমি মদীনা গিয়েছিলাম এসে শুনলাম আবদুন আর নেই।
মিশর লাশ পাঠাতে অনেক খরচ হয়।
মালিকের কাছে আবদুনের সার্ভিস চার্জের টাকা জমাও ছিলো।
মালিক আবদুনের পরিবারের কাছে জানতে চাইলো কি করবে?
পরিবারের কাছে আবদুনের মরদেহের চেয়ে টাকাটাই বড় হলো।
আবদুন কে রিয়াদেই দাফন করা হলো।
পরিবার কে সুখে রাখার জন্য জীবনের আরাম আয়াশ ত্যাগ করে অসুখ শরীরে বহন করে চলেছিলো আবদুন।
সেই আবদুন কে তার পরিবার শেষদেখাটা না দেখে দেখলো টাকা।
খুবই কষ্টদায়ক।
আন্না ভাই।
LIKHECHEN Shariful Alam Shipul