প্রশ্ন- কিছু মানুষ কেন বেকার ? কি ভাবে চিন্তা করলে আপনি কখনোই বেকাড় থাকবেন না ।
আপনি হয়ত অবাক হবেন যে আমি আমার জীবনে কখনোই বেকার ছিলাম না । যখনই কাজ দরকার হোয়েছে তখনি কাজ খূজে পেয়েছি । অথচ বর্তমানে দেশে লাখ লাখ বেকার আসলে এই বিশাল সংখ্যক লোকের বেকারত্বের কারণ কি ? দীর্ঘদিন নানা কাজ ও বিজনেসের সাথে জড়িত থাকার কারণে দেশের মানুষ সম্পর্কে আমার কিছু ধারনা আমি পেয়ে গেছি । টাঈ পড়োঠোমে একটু আমাদের দেশের যারা ণীজেডেড় বেকার মণে করেন তাঁদের সম্পর্কে একটু আলোচোণা করি তাঁর পরে আমি পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরব যে জবের এত অভাব তবু আমি আমার জিবনে কোনদিন বেকার থাকি নি । অথচ দেশে বেকারের অভাব নাই । চলুন প্রথমেই দেশের যারা বেকার তাদের সম্পর্কে একটু যেনে নেই ।
১। অযোগ্য –
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এ , এমে পাশ করার পর যে চাকুরী প্রার্থী ১ পৃষ্ঠার একটি আবেদনপত্র শুদ্ধভাবে লিখতে পারেনা, ১০০ টাকা দিয়ে মেট্রিক ফেল কোন এক ফোটোকপি বা কম্পিউটার কম্পোজের দোকান থেকে কপি পেস্ট করা সিভি বানিয়ে নেয় । এদেরকে আপনি কি বলবেন ? সার্টিফিকেট ধারী অলস বোতল গুলোকে আমি বেকার মানতে নারাজ । এড়া হচ্ছে বোতল এগুলোকে ভাঙরির দোকানে কেজি দড়ে বিক্রি করে দেয়া উচিৎ – তবেই সমাজ ও পরিবেশ পরিষ্কার থাকবে । মাস্টার্স পাস করেছে একটা চাকুরি ভীষণ দরকার । জিজ্ঞাসা করেন তিনি কি কি কাজ জানেন ? মাত্র লেখা পরা শেষ । খুব বেশি কিছু তার জানার কথাও না । কিন্তু সে শুরুতেই খুজতে থাকে বেতন দেবে কত ? আরে বেতা অনভিজ্ঞ কাউকে কম্পানিত নিতেই চায় না – অথচ বলদ বেটা বেতন, বোনাস, ছুটি কয়দিন এসব নিয়ে বেস্ত । এরা একদম অকর্মা- অযোগ্য , কোম্পানিকে দেবার মত এদের কিছুই নাই , কোম্পানি এদের কম পরিশ্রমে কি কি সুযোগ সুবিধে দেবে এটাই অদের জিবনের লক্ষ্য । মাত্র লেখাপড়া শেষ করে যেখানে জব পাওয়াটাই একটা চ্যালেঞ্জ সেখানে বেতন নিয়ে বাড়াবাড়ি এবং দর কষাকষি করা বলদের লক্ষন । কোম্পানি মালিকেরা অনেক স্মার্ট তারা কথা বললেই চাকরি প্রার্থীর মাথায় কি আছে বুঝতে পারে তাই এই অযোগ্য লোকগুলো কখনই চাকুরি পায় না- পাবেও না ।
২। পরিশ্রম করতে রাজি না –
মার্কেটিং এ জব করবে না, অনেক চাপ, বসের অনেক প্যারা, টার্গেট মিস করলে বোনাস তোঁ দুরের কথা চাকরি ধরে রাখাই কঠিন । যে রোদ- বৃষ্টিতে বাইরে বের হতে পারেনা, লোকাল বাসে উটতে পারে না , ধুলাবালিতে কষ্ট হয়, কাজের চাপ বড্ড অসহ্য লাগে তাকে আপনি কি বলবেন ? এদের আমি বলব ননির পুতুল । কোম্পানি এমন লোক কখনই চায় না । এখানেই শেষ না ঢাকার বাইরে জব করতে রাজি না । শুধু কি তাই ? সম্ভব হলে চাকরি প্রার্থীর নিজে জেলা অনেক সময় নিজ থানায় হলে একটু ভাল হয় । এখানেই শেষ না একটু অফিসিয়াল জব হলে ভাল হয় !! মানে এসি রুম এবং টেবিল চেয়ার বসে কোন কাজ । এরা অপদার্থ, অলস, আরামপ্রিয়, ভোগবাদি, । এসব আবালেরা চাকরী খুজে সময় নষ্ট না করে বাবার টাকায় একটি কোম্পানি খুলে এসি রুম ও চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয় অন্যথায় এদের কপালে জুতা জুতবে চাকুরি নয় । এমন ছেলেরা বড়লোকের অসুন্দর বা বদমেজাজি মেয়েকে বিয়ে করে ঘর জামাই থাকতে পারে- অন্তত ৩ বেলা খেতে পারবে ।
৩। কাজের ব্যাপারে সিরিয়াস না –
একদিন এক ছেলেকে ইন্টার্ভিউয়ের জন্য ডেকেছিলাম , ১০ টায় আসার কথা ছিল ১২ টা ২০ এ এসেছিল- অথচ সে ঢাকাতেই থাকে । সিভি চাইলে পাইপের মত করে পেঁচানো গোলকরা ২ পাতার একটা সিভি আমাকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন । সিভিতে যা যা লেখা ছিল সেখান থেকেই প্রশ্ন করলাম, তার এক্সট্রা কারিকুলাম থেকে সিভিতে যা যা লেখা ছিল তার কিছুই সে বলতে পাচ্চে না । সময় মত আসে নাই, একটা ফাইলে করে সুন্দর ভাবে সিভি আনতে পারে নাই, সিভিতে কি কি লেখা আছে সেসবি বলতে পাচ্চে না – এইবার বলেন এই ছেলেকে জব দিলে সেই কোম্পানির কি অবস্থা হবে ? ১০ তার ইন্টার্ভিউ যে স্কাল ৯ টায় উপস্থিত হয় না তাক কি বলবেন ? এরা নবাব সিরাজ উদ্দউলার বংশধর । ২ দিন পরে গার্ল ফ্রেন্ড অন্য কাউকে বিয়ে করে সংসার করবে । তখন এই ছেলে ফেসবুকে পোস্ট লিখবে – ছেলেটি বাবা হতে চেয়েছিল কিন্তু সে মামা হল !! অথবা লিখবে – “ জগতে ভালবাসার কোন মুলো নেই, জিবনে টাকাই সব !! “
৪ । কাজ জানে না –
আপনি অফিসে পিওন লাগবে লিখে সারকুলার দেন । হাজার না লাখ লাখ দরখাস্ত পাবেন । অথচ অনেক ব্যাংক বিমায় যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন কাজের লোক পাওয়া যায় না । আমাদের দেশের অনেক কোম্পানির পরিচালক ও বাবস্থাপনা পরিচালক আছেন বিদেশি । গার্মেন্টসে অপারেটর , লাইন ম্যান, কুয়ালিটি কন্ট্রোল সব যায়গায় লোক পাবেন অথচ অনেক গুলো গার্মেন্টসের জেনারেল ম্যানেজার ও পরিচালক বিদেশি – কারন দেশি ওই লেভেলে কাজ জানা দক্ষ লোক খুজে পায় নি । এগুলো হয়ত মাথায় ধুকছে না ঠিক আছে আপনি একটা খাবার হোটেল দিলেন, হোটেল বয়, ম্যানেজার, ঝাড়ুদার সব ডজনে ডজনে পাবেন কিন্তু খুব ভাল রান্না জানে অভিজ্ঞ এমন বাবুর্চি খুজে পাবেন না । আমি গ্রামে বাজারের ব্যাগ তৈরি করার জন্য একটা কারখানা দিয়েছিলাম । আনুমানিক ৬০ জন মহিলাকে নিয়োগ দিয়েছিলাম খুব ভাল মানের সেলাই করতে পারছে মাত্র ২ জন । আজকাল ফ্রি লান্সারের অভাব নাই ৫ হাজার টাকায় অওেবসাইত বানায়া দেয় । একজনকে ৩ মাসের সময় ও ৫০ হাজার টাকায় একটা অওেবসাইট বানাতে দেই । বছর পার হয়ে গেছে এডভান্স প্রায় ৪০ হাজার দেয়া কাজের ৪০% ও এখনও শেষ করতে পারে নি ।
বেকার কে? কারা বেকার ? বাংলাদেশে তারাই বেকার যারা কাজ করতে চায় না, পরিশ্রম করতে আপত্তি আছে, অযোগ্য, অদক্ষ সার্টিফিকেট ওয়ালা মানুষ গুলো বেকারের টাইটেল গলায় ঝুলিয়ে হাঁটছে । অথচ লেখাপড়া জানে না, অশিক্ষিত, কম শিক্ষিত বা অর্ধ শিক্ষিত তারা ঠিকই আয় রোজগার করে সংসার চালাচ্ছে । আমাদের দেশের অর্থনীতির প্রায় পুরতাই এই অশিক্ষিত লেখাপড়া না জানা বা কম জানা মানুষের ঘামের ফসল । আর আমরা যারা সার্টিফিকেট অর্জন করে যারা মনে করতেছি দুনিয়ার সব জ্ঞান অর্জন করা শেষ এই নির্লজ্জ, বেহায়া গুলো আমরা বেকার পরে আছি । মাঝে মাঝে ইচ্চা করে বাংলাদেশের সব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর আসন ৯০% বন্ধ করে দেই । ক্ষমতা থাকলে ডিগ্রি বাদ দিয়া সবাইরে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পরে কাজে ঠুকিয়ে দিতাম ।
এই সার্টিফিকেট ওয়ালা বেকার তৈরির জন্য দায়ি আমাদের ফালতু লেখাপড়া । এরা কি লেখাপড়া করে খোদা মালুম । বইয়ের কোথায় লেখা আছে যে লেখাপড়া করলে এই কাজ করা যাবে না অইকাজ করা যাবে না ? অফিসে বসে চাকুরি করতে হবে শুধু নইলে ম্যান থাকবে না ? এইসব নষ্ট চিন্তা এদের মাথায় কে দিল ? কারা দিল ? কথা থেকে আসল ? আর পরে যারা দায়ি তারা হল অশিক্ষিত সমাজ বেবস্থা– শিক্ষিত লোক এত লেখাপড়া করার পরে এই কাজ করছে ? এই কাজ যদি করবে তাইলে এত লেখাপড়ার কি দরকার ছিল ? বিজনেস করলে লেখাপড়ার দরকার কি ? এত লেখাপড়া করে সেসে দোকানদারি ? এসব কথা বলে শিক্ষিত লোকদের অনেক কাজ করতে বাধা দেয়া বা সমালচনা করা । আর পরে আছে পরিবার শুধু বউ কেন অনেক সময় নিজের মা ও চায় না আপনি বিজনেস করুন । ভাল জব না করলে তোঁ মেয়ের বাবা মেয়েই বিয়ে দেবে না । অনেক সময় শুধু চাকুরি হলে হবে না হতে হবে সরকারি চাকুরি । এসব নানাবিধ সমস্যার কারনে আমাদের বেকারত্তের হার সহজেই কমবে না ।