প্রশ্ন – বিয়ে নিয়ে রাজা একটি গোল্প ?
এক দেশে এক রাজা ছিলো। সে খুব ক্ষমতার অধিকারী।কিন্তু একটাই সম। রাজার কোন রানী নেই। প্রজারাও এটা নিয়ে ঠাট্টা করতে লাগলো। মন্ত্রী অনেক খুঁজে মেয়ে আনলেও তাদের কাউকেই রাজার মনে ধরে না। মন্ত্রী বলল ;রাজ্যের যে কোন মেয়ে আপনাকে বিয়ে করতে রাজী আর তাদের বাবা মা রাও নিজের মেয়েকে আপনার কাছে বিয়ে দিলে নিজেদের ধন্য মনে করবে।এই কথা শুনে রাজা বললেন :আমি এমন কাউকে বিয়ে করতে চাই না যে আমাকে বিয়ে করলে নিজেকে ধন্য মনে করবে।আমি এমন কাউকে বিয়ে করব যাকে বিয়ে করলে আমার নিজেকে পরিপূর্ণ মনে হবে।
মন্ত্রী পরল বিরাট ঝামেলা। এমন মেয়ে যাকে বিয়ে করলে রাজার জীবন পরিপূর্ণ হবে। সে তো কোন রাজকন্যাই হবে।কিন্তু না. ….. রাজা বললেন : এমন মেয়ে যার মন আমার প্রজাদের জন্য যত নরম হবে অন্যয়ের বিরুদ্ধে ততটাই কঠোর হবে।যে আমার দুর্বলতা না আমার শক্তি হবে। মন্ত্রী বললেন বুঝবেন কিভাবে মেয়েটির মন কেমন? রাজা বললেন : সেটাই তো ভাবছি মন্ত্রী।
সেদিন সারা রাত ভেবে রাজা একটা বুদ্ধি পেলেন। তিনি নাপিতকে ডাকলেন। পরদিন নাপিত দোকানে একটা কাগজ ঝুলিয়ে দিলো। যাতে লেখা ছিলো দোকানের সামনে যে আয়নাটা আছে সেটা জাদুর আয়না। এই আয়নায় যে মুখ দেখবে আয়না তার মন পড়তে পারবে।যদি কেউ অহংকারী, লোভী,হিংস্র হয় তবে তার চেহারায় কালে দাগ পরবে।আর যে নিঃস্বার্থ, পরোপকারী আয়নায় তার চেহারার কোন পরিবর্তন হবে না। এরপর নাপিতের কাছে মেয়েদের আসা প্রায়ই বন্ধ হয়ে গেলো।এমনকি তারা নিজ ঘরে আয়না দেখতেও ভয় পেতো। তারা বাবা মা কে বলত: তোমরা কি চাও আমার সুন্দর চেহারাটা কালো হয়ে নষ্ট হয়ে যাক?
তারা বিয়ে না করে থাকবে কিন্তু আয়নায় মুখ দেখবে না।মন্ত্রী অনেক চিন্তিত হয়ে পরলো। হঠাৎ মন্ত্রীর একটি মেয়ের কথা মনে পরলো যে এই আয়নায় মুখ দেখতে রাজি হবে।কিন্তু সমস্যা হলো সে একজন মেষচালকের কন্যা। রাজা বললেন তাতে কি হয়েছে? যে এই আয়নায় মুখ দেখবে সেই হবে এই রাজ্যের রানী।
সারা রাজ্যে জানিয়ে দেয়া হলো এই খবর।পরদিন সবাই এসে হাজির রাজবাড়ী গমগম করছে মানুষের ভিড়ে।হঠাৎ নিশ্চুপ ভাবে মেয়েটি প্রবেশ করল। সে সবাইকে কুর্নিশ করে বলল আমি মোটেও নিস্কলুষ নই। জানি না কত যে ভুল নিজের অজান্তেই করে বসে আছি। কিন্তু আমি আমার ভুলগুলেকে আমার দুর্বলতা ভাবিনি। আমি ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি। মনের বিচার হলে আমি তো মনকে ভুল থেকে দূরে রাখতে পরি না।কিন্তু আমি নিজেকে সেটা থেকে সরিয়ে রাখতে পারি।তারপরেও আমি এই আয়নায় মুখ দেখবো। মেয়েটি আয়নার সামনে গেল আর নিজের চেহারা দেখল। কিন্তু কি আশ্চর্য তার চেহারা এতটুকু বদলালো না। তখন রাজা তার কথা রাখল মেয়েটিকে বিয়ের কথা জানালো। এমন সময় সেখানে উপস্থিত অন্য একটি মেয়ে বলে বসলো ঐটা কোন জাদুর আয়না নয়।আমি ওটা দেখতে চাই। সবাই সুর মিলালো তার সাথে। রাজা বললেন :আয়না জাদুর হোক, আর না হোক।শর্ত অনুযায়ী তোমাদের সবাইকে আয়না দেখার সুযোগ দেয়া হয়েছিলো। তাই এখন এই মেয়েটি হবে আমার রানী আর এই রাজ্যের রানী মা।
কালেক্টেড পোষ্ট