প্রশ্ন – বড়োলোক ও সম্পদশালী হবার উপায় কি কি ?
আমরা সবাই ইচ্ছা পোষণ করি যে, আমিও একদিন বড়ো লোক হব, আমার অনেক টাকা পয়সা থাকবে । কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ সারা জীবন শেষ করে ফেলে কিন্তু কোনদিনও সম্পদশালী হতে পারে না । শুধু আশা করে কেউ কোনদিন সম্পদের দেখা পায় নাই । সফল হবার কোন শর্ট কাট ওয়ে বা যাদু মন্ত্র নাই, ইহা অনেক পরিশ্রমের ফসল । সম্পদ আপনাকে অর্জন করতে হবে, গড়ে নিতে হবে, এবং সময়ের সাথে সাথে সেই সম্পদকে বৃদ্ধি করাতে হবে তবেই আপনি সফল হবেন । সম্পদশালী হওয়া কখনোই সহজ কিছু নয় তবে হ্যাঁ আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি কেউ যদি আমার দেয়া এই উপায়গুলো ১০০% অনুসরন করে তবে সে অবশ্যই সম্পদশালী হবেন ।
১। বিবাহের মাধ্যমে শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীর বা স্বামীর সম্পদ
– বিবাহের মাধ্যমে একজন বেকার অল্প শিক্ষিত সুন্দরি মেয়েরা আজকাল অনেক কোটিপতি স্বামী পেয়ে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন করেছে । অনেক গরীব ঘরের শিক্ষিত মেধাবি ছেলে বড়লোকের মেয়ে বিয়ে করে নিজের ভাগ্য রাতারাতি বদলে ফেলেছে । আপনি ছেলে মেয়ে যাই হন না কেন আপনার জীবনসঙ্গীর অর্থনৈতিক অবস্থাকে কখনই হালকা ভাবে নেবেন না । কোন রকম পরিশ্রম ছাড়াই আপনি ও আপনার সন্তানেরা সম্পদশালী হবার সুবর্ণ সুযোগ কখনোই হেলায় হারাবেন না । টাকা ওয়ালা ছেলে বা মেয়েরা খারাপ এমন লোক কোথায় কান দেবেন না । আমি অনেক গরীব লোক চিনি যারা জঘন্য চরিত্রের অধিকারি । টাকা হলে মানুষ খারাপ হয় এটা মুলত মূর্খ ও অশিক্ষিত গরীব মানুষদের ধারনা । আমি নিজে অনেক সম্পদশালী মানুষদের সাথে চলাফেরা করে দেখেছি যারা অত্যান্ত বিনয়ী ভদ্র এবং মজার মানুষ । আমি মানুষের সাথে চলাফেরা করে দেখেছি মানুষ কত খারাপ হতে পারে তা বলে শেষ করা যাবে না কিন্তু তার সাথে টাকার কোন সম্পর্ক নেই – ধনী গরীব যে কোন মানুষ খারাপ হতে পারে । সম্পদশালী হতে চাইলে বিয়ের সময় অবশ্যই এই সুযোগ নেয়ার জন্য চেষ্টা করা যেতে পারে ।
২। বিজনেস শুরু করা
– পৃথিবীর প্রায় বেশিরভাগ বিলিয়নিয়ার বিজনেস ম্যান । চাকুরি করে আপনি খেয়ে পরে বাঁচতে পারবেন কিন্তু কোনদিনই অগাধ সম্পদের মালিক হতে পারবেন না । হয়ত ভাবছেন সরকারি চাকুরি করলে অনেক টাকা । কিন্তু না , ঘুষ দুর্নীতি ছাড়া আপনি কখনও অনেক টাকা চোখে দেখবেন না , আর আকাম কুকাম করে অল্প সময়ের মধ্য অনেক সম্পদ অর্জন করতে পারলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় ও আইনের যাত্রাকলে অনেকে চোখের সামনে নিমিষে শেষ হতে দেখেছি । সুতরাং কোটি কোটি টাকা আয় করতে চাইলে আপনাকে বিজনেসে আসতে হবে । অনেকেই , হোটেল, সবজি দোকানদার, বিরিয়ানি, কাপড়ের দোকানের দিয়ে ঢাকা শহরে নিজের বাড়ি গাড়ি করেছে । কিন্তু বেশিরভাগ সাধারন ও সৎ চাকুরিজীবির জন্য ইহা শুধু স্বপ্ন দেখাই সম্ভব বাস্তবে সম্ভব নয় ।
৩। দক্ষ ও অভিজ্ঞ অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা খুঁজে নেয়া –
সফলতার পথ পারি দিতে আপনাকে সমসময় ঝুঁকি ও সমস্যা মোকাবেলা করে চলতে হবে সেখানে একজন সফল, দক্ষ, সৎ ও অভিজ্ঞ অর্থনৈতিক পরামর্শ দাতা আপনার জন্য আর্শীবাদ সরূপ । আপনি অনেক সময় দ্বিধা দ্বন্দে ভুগবেন, সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাবেন সেখানে অভিজ্ঞ পরামর্শ দাতা আপনাকে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে । বিল গেটসের সব অর্থনৈতিক বা বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত কি বিল গেটস নিজে নেয় ? উনার ও পরামর্শ দাতা আছে । আপনি সম্পদশালী হতে হলে আপনাকে সঠিক পরামর্শ দাতা খুঁজে নিতে হবে । প্রাথমিকভাবে আপনার আশেপাশের বা পরিবারের কাউকে অনুসরন করলেও পেশাদার পরামর্শদাতা সমসময় আপনার জন্য উত্তম । কখনই আশেপাশের লোকজন, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের নিকট নিজের অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন না। উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে তাই পারলে পেশাদার পরামর্শদাতা খুঁজে নেবেন ।
৪। সফল মানুষদের সাথে চলুন –
বন্ধু বান্ধবদের মধ্য একজনের স্বভাব বা অভ্যাস অন্য জনের মধ্য প্রভাবিত হয় । সম্পদশালী হবার জন্য আপনাকে বিত্তবান মানুষদের সাথে সম্পর্ক করতে হবে, তাদের সাথে চলতে হবে, বন্ধুত্ব করতে হবে, এতে করে আপনি যে শুধু তাদের থেকে সম্পদশালী হবার গুন বা পরামর্শ পাবেন তা নয় , অনেক সময় আপনি অনেক ভাল ভাল সুযোগ বা অফার ও পাবেন যা আপনাকে সম্পদশালী হতে সাহায্য করবে । আপনার চেয়ে সফল মানুষেরা কখনও আপনাকে তাদের প্রতিযোগী মনে করবে না, হিংসে করবে না, আপনার থেকে তাদের ২ টাকা নেয়ার ও দরকার পরবে না । সুতরাং সফল হতে হলে সফল মানুষদের সাথে চলুন ।
৫। সঠিক পেশা বেছে নিতে হবে-
সবাই বিজনেস করবে বা বিজনেস সবার জন্য ব্যাপারটা আসলে এরকম না । কিন্তু বিজনেস বা জব যেটাই হোক না কেন আপনার জন্য যেটি সঠিক সেই সঠিক বিজনেস বা জব আপনাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে হবে । সাধারণত বিজনেস বা পেশা হিসেবে এমন কিছু বেছে নেবেন যেটা আপনার মন থেকে খুব ভাল লাগে এবং আনন্দ পান । আপনার বিরক্ত লাগে ভুল করেও এমন কোন কিছু পেশা হিসেবে বেছে নেবেন না । বিজনেস কোনোটাই ছোট না ভাংরি মালের বিজনেস করে অনেকেই প্রাইভেট কারে চলাফেরা করে সুতরাং বিজনেসের ক্ষেত্রে আপনি যেটাই বেছে নেন সেখানেই অনেক টাকা আয় করতে পারবেন কিন্তু জবের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন না । সাধারণত ডাক্তার, সার্জন, পেট্রোলিয়াম ইঙ্গিনিয়ার, আইনজীবী, আইটি ইঞ্জিনিয়ার বা এক্সপার্ট তাদের জীবনে কোটি কোটি টাকা আয় করে থাকে
৬। ঋণ বা ধার করে খরচ করবেন না
সাধারণত যাদের ধার করে খরচ করার স্বভাব তাদের সারা জীবন শেষ হয় ঋণ শোধ করার মধ্য দিয়েই, তারা সঞ্চয় করার সুযোগ না নিয়ে খরচে ব্যস্ত থাকে আর প্রকৃতি তার আপন নিয়মে ঋণগ্রস্ত মানুষদের আজীবন গরীব করে রাখে । টাকা খরচ করে কি করে ভাল থাকা যায় বা উপভোগ করা যায় এমন চিন্তা না করে বরং “ কি করে এই টাকা কিভাবে বিনিয়োগ করলে আমরা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি “ ? এই মানসিক পরিবর্তন সম্ভব হলে সেই মানুষ কখনই গরীব থাকবে না ।
৭।সঞ্চয় করতে হবে । –
নিয়ম হল সঞ্চয় করার পরে খরচ করা কিন্তু দেশের বেশিরভাগ পাবলিক আগে খরচ করে, অনেক সময় পারলে ধার কইরা খরচ করে , অনেকটা পাঁল্লা দিয়া খরচ করে, যে যত খরচ করে শে ততো বড়োলোক বা বড় বংসের লোক এমন একটা ভাব ধরে বসে থাকে, সঞ্চয় ঘোড়ার ডিম । যা হবার তাই হয় কোনোদিন ব্যাংকে ২/৪ লাখ সঞ্চয় করতে পারে না ফকির ফকির থেকে যায় । আপনি যত আয় করেন , আর যত বেশি বেতন পান না কেন বছর শেষে আপনি কত সঞ্চয় করলেন সেটাই আপনার টাকা । শুধু তাই না জগতে কোন কিছুর গ্যারান্টি নাই সুতরাং লাভজনক বিজনেস বলেন আর সিক্স ফিগার স্যালারি বলেন কোন নিশ্চয়তা নাই, যেকোনো মুহূর্তে চলে যেতে পারে । সঞ্চয়ের ধান্দা নাই বলে অনেক মানুষ আজীবন পরিশ্রম করেও তারা কখনো বড়লোক হতে পারে না ।
৮। বড়লোকদের মত খরচ করতে হবে –
ধনী মানুষের কোটি টাকা দামের প্রাডো গাড়ি দেখে হয়তো আপনার মনে হতে পারে- ওরে বাবা কত টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছে । তাইলে আমি ১০ লাখ টাকা দিয়া একটা পুরাতন এক্স করলা কিনলে সমস্যা কি ? সমস্যা আছে । ১০০ কোটি টাকার মালিক যদি মাত্র ১ কোটি টাকার গাড়িতে চলতে পারে তবে আপনার ব্যাংকে ১ কোটি থাকলেও আপনার ১ লাখ টাকায় একটা পুরাতন বাইক কেনা উচিৎ কার গাড়ি নয়, কিন্তু বেশিরভাগ পাবলিক এই কাজই করে থাকেন । এছাড়া সম্পদশালীরা হুট হাট কিছু কিনে না । সফল মানুষেরা অনেক কিছু জেনে বুঝে ক্রয় করে, তুলনা করে ক্রয় করে, অফ সিজনে ক্রয় করে যাতে অনেক সাশ্রয়ী মূল্য তারা কিনতে পারে । কেনা কাটার অনেক কৌশল বা বিষয় আছে যা আমি অন্য চ্যাপ্টারে আলোচনা করব ।
৯। সম্পদশালী হতে শপথ নিতে হবে –
বড়লোক হবার জন্য যা করা দরকার তা করে না ফলে বেশিরভাগ মানুষ আজীবন গরীব থেকে যায় । যদি কেউ বই পরে, সেমিনারে যায়, সফল মানুষদের সাথে উঠা বসা করে, কিন্তু সম্পদশালী হবার জন্য কিছু না করে তবে সেই ব্যক্তি কখনই সম্পদ অর্জন করতে পারে না । আপনি যদি “ যেমন ভাবে চলছেন ঠিক তেমন ভাবেই চলেন কোন কিছু পরিবর্তন না করেন তবে আপনি কখনই সম্পদ অর্জন করতে পারবেন না । “ বেশিরভাগ মানুষ জীবনে ব্যর্থ হয় কারন সফল হবার জন্য তারা কখনই মন থেকে কঠিন সংকল্প করে নি বা সিদ্ধান্ত নেয় নি । অনেক কেই বলতে শুনি আমি একদিন বড়লোক হব, একদিন অনেক টাকা হবে, বাড়ি গাড়ি হবে , ব্যাংকে টাকা থাকবে অনেকে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করে কিন্তু মন থেকে নিজে সিদ্ধান্ত নেয় না, আমি বড়লোক হবই এবং বড়োলোক হবার জন্য যে কঠোর পরিশ্রম ও পরিবর্তন দরকার নিজের মধ্য সেটা আনব এবং প্রতিজ্ঞা করে যে আমি বড়লোক হব তবে সে সম্পদশালী হবার প্রথম পর্ব অতিক্রম করল । সম্পদ অর্জনের জন্য যখন আপনি মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নেবেন তখন আপনার কাজ কর্ম, ব্যবহার, কথাবার্তায় পজেটিভ পরিবর্তন আসবে আপনি অনেক বেশি আত্নবিশ্বাস দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ কম করবেন বা সিদ্ধান্ত নেবেন যা আপনাকে ধীরে ধীরে সম্পদশালী করে তুলবে।
১০। যে কোন কাজ সাশ্রয়ী মূল্যে করাতে হবে ।
টাকা হলে সব হয় কিন্তু প্রায় সবসময়ই একটি কাজ তুলনামূলক কম খরচে করা যায় । যে কোন কাজ করে নেয়ার সময় আপনার মাথায় এটা আসতে হবে যে কি করে এই কাজটি কম খরচে করানো যায় । আপনার মাথাকে কাজে লাগাতে হবে , সবসময় নতুন, সহজ বা সাশ্রয়ী ভাবে কি করে করা যায় এটা মাথায় রাখতে হবে । মনে করেন আপনার একটি জমি আছে যেখানে আপনি বালু ভরাট করতে চান কারন আপনি ৫ বছর পরে সেখানে বাড়ি করবেন । কেউ আপনাকে পরামর্শ দিল যে বালি ফেলে প্রচুর পানি দিয়ে গাড়ি দিয়ে ডলে নিলে ভাল হবে আর আপনি সাথে সাথে এই কাজ শুরু করে দিলেন এবং পানি ও ডলে নেয়া বাবদ অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা খরচ করলেন । বলুন তো এখানে ভুল কোথায় ? এই কাজটি কি অন্যভাবে হত না ? অবশ্যই হতো । এখানে ভুল হল আপনাকে ডলে নেয়া আর পানি দেয়া আসলে কোন দরকার নাই । যেকোনো খোলা জমিতে বালু ভরে রাখলে বৃষ্টির পানি ও সময়ের সাথে সাথে সেটা এমনিতেই শক্ত হয়ে যাবে আর ৫ বছর সে অনেক লম্বা সময় ।
১১। বাড়িতে বেশি বিনিয়োগ করব না ।
সুন্দর বাড়ি কার না ভাল লাগে । কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ যারা শহরের তারা বাসা ভাড়ায় অনেক বেশি টাকা ব্যয় করে এবং যারা গ্রামে তারা অনেক বেশি টাকা দিয়ে বাসা তৈরি করে যা অত্যান্ত ভুল বিনিয়োগ । অর্থনৈতিক গুরুদের মতে মাসিক ইনকামের ২০% এর নিচে আপনার বাসা ভাড়ায় বা বাড়িতে বিনিয়োগ করবেন কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ প্রায় ৩০%-৫০% খরচ করে ফেলে আর গ্রামের কিছু মানুষ জমি বিক্রি করে বাড়ি করে, কেউ কেউ ধার দেনা করে ।অনেকে ১০/১৫ বছর বিদেশ খেটে দেশে এসে গ্রামের মধ্য ৩ তালা বাড়ি করে পরিনামে ১৫ বছর আগে যা ছিল তাই থেকে যায় । মনে রাখবেন গ্রামের বাড়ি সেটা যতই সুন্দর হউক না কেন আপনাকে কামাই করে খাওয়াবে না বরং বছর বছর বাসা মেরামতের পিছনে অনেক টাকা খরচ করতে হবে । অনেকে মনে করে গ্রামে বাসা ভাড়া দিয়ে আয় করবে, কিন্তু ভাড়া বাবদ সামান্য টাকা পেলেও গ্রামে বাড়ি ভাড়া কখনই লাভ জনক নয়, ইহা একটি চরম আকারের বোকামি ছাড়া কিছুই না আর আমাদের দেশে এই বোকার সংখ্যা কয়েক কোটি । বাড়ির পিছনে এই টাকা বিনিয়োগ না করে যদি জমি কেনা বা কোন বিজনেসে বিনিয়োগ করতো তবে অনেকেই কোটিপতি হতে পারতো কিন্তু সবাই এটি বুঝে না ।
১২। বাইক, কার ও পরিবহন খরচ কম রাখা
বাইক ও প্রাইভেট কার হচ্ছে এমন একটি জিনিস যার দাম দিন দিন শুধু কমতেই থাকবে, কখনই দাম বারবে না । শুধু তাই না । দামি গাড়ির দাম আরও দ্রুত কমতে থাকে, এছাড়া দামি ৮ বাইক ও কারের পার্টস থেকে শুরু করে মেইন্টেইনেন্স বাবদ অনেক বেশি টাকা গুনতে হয় । এখানেই শেষ? না শেষ না। দামি গাড়িতে সাধারণত অনেক বেশি ট্যাক্স দিতে হয়, অনেক বেশি জ্বালানি খরচ হয় । প্রতি মাসে অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকার বেশি তেল খরচ বছর শেষ প্রায় আড়াই লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ হিসেবে আপনার খরচের খাতায় যোগ হবে । সামর্থ্য নাই অথচ আলগা ভাব আর সেলফি নেয়ার জন্য এসি বাস বা বিমানে বিজনেস ক্লাসে ভ্রমন করতে যাবেন না । ৫/৬ ঘণ্টার ভাব নেয়ার জন্য অহেতুক টাকা খরচ করলে অভাব কোনদিন আপনার পিছু ছাড়বে না । সুতরাং বিমানে ফার্স্ট ক্লাস, গাড়ি কিনলে সব সময় পুরাতন গাড়ি কেনা এবং কম দামি কম দামের সি. সি দেখে বাইক কিনলে আপনি অনেক টাকা বাচাতে পারবেন যা আপনাকে সম্পদশালী হতে সাহায্য করবে ।
১৩। কিছু কথা বাদ দিতে হবে –
যেমন “আজ মরলে কাল ২ দিন” – বুঝলাম আজকে মরলে কাল ২ দিন কিন্তু আজকে যদি না মরেন ? আর আপনি আজকে মরবেন এই খবর কে দিছে আপনারে ? এসব হল যারা ব্যর্থ মানুষ তাদের জন্য হতাশায় ভরা মিথ্যা সান্তনা । বছরে ৩৬৫ দিন ৭০ বছর বাচলে আপনার জীবনে এমন দিন আসবে মোট ২৫ হাজার ৫৫০ বার আর সারা জীবনে আপনি মারা যাবেন ১ বার অর্থাৎ মারা যাবার জন্য আপনি মাত্র একটি দিন সুযোগ পাবেন । সুতরাং আপনাকে ধরে নিতে হবে আপনি আজকে মারা যাচ্ছেন না সুতরাং কাল কি খাবেন সে হিসাব আপনাকে আজকেই করতে হবে । “খায়া দায়া যা বাঁচে, রাত পহালে আল্লাহ আছে” সমাজে প্রচলিত এমন কিছু কথা আছে আপনাকে এসব কথা মাথা থেকে ঝেঁরে ফেলতে হবে । আমি অসংখ্য পরহেজগার ও ভাল সুন্দর মনের মানুষ চিনি অভাব যাদের নিত্য সঙ্গী, ঘরে চাল নাই, মাথার উপরে চাল নাই । পকেটে টাকা নাই । গোয়ালে গরু নাই, ব্যাংকে টাকা নাই শুধু নাই আর নাই- কর্মই মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে সুতরাং সব আজকে ভোগ বিলাসে শেষ করলে আগামীকাল আপনাকে চরম অভাবে পরতে হবে । আপনার আশেপাশে এমন অনেক পরিচিত লোক পাবেন যাদের ১০/২০ বছর আগে বাপ দাদার অনেক সম্পদ ছিল – বিক্রি করে খাইতে খাইতে এখন আর কিছুই নাই । সুতরাং আপনাকে আগামী দিনের চিন্তা করেই আজকে খরচ করতে হবে । এবং এসব মিথ্যা ও বানোয়াট সান্তনা থেক দূরে থাকতে হবে ।
১৪। সফল মানুষকে অনুসরন করব ।
আপনার বন্ধু বান্ধব, যাদের সাথে চলা ফেরা করবেন তারা যেন অবশ্যই সফল ও পজেটিভ মানুষ হয় এদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন । আত্মীয় স্বজন হয়ত আপনার নিজের ঠিক করা নয় কিন্তু বন্ধু বান্ধব অবশ্যই আপনি নিজেই ঠিক করবেন । কখনই নেগেটিভ ও ব্যর্থ মানুষদের সাথে চলা ফেরা করবেন না । আশেপাশে কেউ না থাকলে দূরের কাউকে অনুসরন করবেন মনে রাখবেন অন্য কোন লোকের থেকে ভাল কিছু শেখা বা অনুসরন করা লজ্জার কিছু না । বরং সঠিক মানুষকে অনুসরনের জন্য বেছে নেয়া অনেক যোগ্যতার সাক্ষর বহন করে । বিল গেটস ও ওয়ারেন বাফেট আমার বন্ধু আত্মীয় বা পরিবারের কেউ না কিন্তু আমি তাদের অনুসরন করি । বিলিওন বিলিওন ডলার সম্পদের মালিক হওয়া সত্তেও বাফেট তার পুরাতন বাড়িতে বসবাস করে – আমিও খুব অল্প টাকায় তৈরি বাড়িতে বসবাস করি । একই ভাবে বিল গেটস অনেক টাকা দান করে আমিও এমন একটি দাতব্য সংগঠন পরিচালনা করি নাম রবি প্রাইজ – ।
১৫। সাহসী ও পজেটিভ হতে হবে ।
এরা সব কিছুর মধ্য নেগেটিভ জিনিস খুঁজে । কোন একটা কিছু শুরু করার আগেই চিন্তা করে যদি না হয় ? বিজনেস শুরুর পরে চিন্তা করে সিজন ভাল না । অনেক সময় ভাবে এই বিজনেস না অন্য বিজনেস করলে হয়তো বেশি ভাল হত । এই বছর বিজনেস হয়তো ভাল যাবে না । কেউ খুব সস্তা দামে জমি বিক্রি করতে চাইলেও এসব লোকেরা ভয় পায়, অনেক সুন্দর সুযোগ আসলেও তারা সেখানে খারাপ দিক খুঁজে, মনে জোর নাই, এমন নেগেটিভ ও ভীতু মানুষদের জন্য সম্পদ না । সম্পদশালী হতে হলে ঠাণ্ডা মাথায় অনেক বেশি ঝুঁকি নেয়ার মত সাহসি ও পজেটিভ হতে হয় । জোরে বাইক চালানো, উচ্চস্বরে কথা বলা, মারামারি করার মত সাহস দিয়ে সম্পদ অর্জন হয় না বাস্তব জীবন এমন সাহসিকতার কোনো মূল্য নাই ।
১৬। ঝুঁকি নিতে হবে –
পৃথিবীতে খালি হাতে এসেছি খালি হাতে চলে যাবো। যা অর্জন করেছি এখানে করেছি যা হারিয়েছি এখানেই হারিয়েছি সুতরাং ভয় পেলে চলবে না । হিসেব করে সবসময় আপনাকে ঝুঁকি নিতে হবে । যেখানে কেউ সাহস পাচ্ছে না সেখানে আপনাকে সাহস করতে হবে । যেখানে সবাই না বলেছে সেখানে আপনাকে হিসেব করে হা বলতে হবে যা সবাই পারে না তা আপনাকে পারতে হবে , । যা সবাই বলছে হবে না আপনাকে হওয়াতে হবে । জীবন মানেই ঝুঁকি । যারা হিসেব করে ঝুকি নিতে পারে জগতে তারাই সাফল্য লাভ করে ।
১৭। কাজ করতে হবে –
আপনার যদি আয় না থাকে টাকা সেভ করবেন কোথা থেকে ? কোন উপদেশ ও পরামর্শ কাজ করবে না , যে বই পরেন আর যেই মুভি দেখেন না কেন আপনি যদি কাজ করতে না চান , কাজ দেখে ভয় পান এবং অলস মানুষ হয়ে থাকেন তবে সম্পদ আপনার জন্য না । আপনাকে কাজ করতে হবে এবং সেই কাজ আপনাকে করতে হবে যেই কাজ আপনার ভালো লাগে এবং যেই কাজ আপনি ভাল পারেন । অবশ্য বলা হয়ে থাকে যে কাজ আপনার ভাল লাগে দীর্ঘদিন সে কাজ করলে আপনি এমনিতেই সেই কাজে ভাল দক্ষ হয়ে যাবেন । সফল মানুষদের লাইফ স্টাইল অনেক সুন্দর হলে সেখানে লুকিয়ে থাকে পরিশ্রম । অনেকে জব হচ্ছে না বলে বেকার থাকে , পছন্দের কাজ না পেলে আপাদত যে কাজ পাওয়া যাচ্ছে আপনাকে সে কাজটি করতে হবে ভাল কাজ বা পছন্দের কাজ নাই বলে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই । আমি জীবনে কোনোদিন বেকার থাকি নাই, কারন আমি জীবিকার তাগিদে যখন যে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছি । প্রায় ১০/১২ রকমের কাজের সাথে জড়িত ছিলাম । প্রায় ১৫-২০ রকমের বিজনেস ও করেছি । আমার সফল হবার পথ কখনোই খুব সহজ ছিল না । মনে রাখবেন আপনি অলস মানুষ হলে কখনোই সম্পদশালী হতে পারবেন না । সফল হতে হলে আপনাকে কাজ করতে হবে প্রচুর কাজ করতে হবে ।
১৮। দক্ষতা অর্জন ।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ একেবারেই অদক্ষ । অনার্স মাস্টার্স শেষ নাই কিন্তু বিশেষ কোন কাজে দক্ষ এমন মানুষ খুঁজলেও পাবেন না আর যারা এমন দক্ষ তারা সবাই খুব ভাল আছেন । আপনি অফিসে কেরানি, পিওন, ঝারুদার, দারওয়ান নিতে চাইলে লাখ লাখ মানুষ পাবেন কিন্তু বিশেষ কোন কাজে দক্ষ লোক যেমন – পিএইসপি ওয়েব ডেভলপার, এক্সেল, ফটোশপ, গ্রাফিক্স জানা লোক চাইলেও কয়েক’শ খুঁজে পাবেন না । ফলে বেশিরভাগ লোক খুব অল্প বেতনের কাজ করে ফলে তাদের দারিদ্রতা কখনই পিছু ছারে না । সফল মানুষেরা সময়, অর্থ ও শক্তি ব্যয় করে সমসময় নিজেকে আপডেট ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য । আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে, কঠিন, ঝুঁকিপূর্ণ এবং সবাই সহজে করতে চায় না বা করতে পারে না এমন পেশা আপনাকে বেছে নিতে হবে । বেশি বেতনের জব অবশ্যই অনেক দায়িত্ব ও চাপ যুক্ত হয়ে থাকে কিন্তু আপনাকে এই চাপ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে । আপনি নিজেই আপনার সবচেয়ে বর সম্পদ । মেধাবী মানুষেরা নিজেকে প্রয়োজনীয় নানা গুনে গুণান্বিত ও পারদর্শী করে ফেলে । আপনাকে আপনার ট্যালেন্ট খুঁজে দেখতে হবে । আপনার মধ্যে যে সম্ভাবনা আছে সেটাকেই আরও বেশি ধারাল করতে হবে । নিজেকে যুগ-উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলার জন্য শিক্ষা, ট্রেনিং এ বিনিয়োগ করতে হবে । এ জগৎ মেধাবী ও যোগ্য মানুষের, অযোগ্য লোকের কোন কদর নেই ।
১৯। নিজের সব সময় আপডেট রাখতে হবে –
বই পড়া, মুভি দেখা, ম্যাগাজিন পড়া, সংবাদ দেখা ভ্রমনে যাওয়া আপনাকে সমসময় যুগ ও সময়ের সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে সাহায্য করবে । আপনি বা আপনার বিজনেস সময়ের সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে না পারলে সময়ের সাথে সাথ আপনি হারিয়ে যাবেন সুতরাং সবসময় যুগের চাহিদা ও পরিবর্তনের আগাম খবর আপনাকে জানতে হবে । ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আগাম ধারনা রাখার জন্যও আপনাকে সবসময় চোখ কান খোলা রাখতে হবে । ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যে যত বেশি বাস্তব সম্মত ধারনা করতে পারবে শেয়ার মার্কেট বা বিজনেস জগতে সে সবচেয়ে বেশি সপ্তহিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে । নিজেকে সম্পদশালী হিসেবে দেখতে চাইলে আজ এখন থেকেই পরাশোনা করতে থাকুন , নিজেকে আপডেট রাখুন । টাকা ৪ দিন থেকে আপনার কাছে আস্তে থাকবে ।
২০। সবসময় ধৈর্য ধারন করবো ।
মানুষের একটা অতি সাধারন স্বভাব হচ্ছে ধৈর্য ধারন করতে না পারা, যা আয় করবে তার পুরাটাই খরচ করা এমনকি পারলে ধার করে বা লোণের উপর যা যা ইচ্ছা তার সবকিছু লাগবে, শুধু লাগবে বললে হবে না – এখনিই লাগবে । যে কোন মানুষ সে যদি কোন জিনিস কেনার ব্যাপারে যথেষ্ট ধৈর্য ধারন করতে না পারে তবে সে কখনোই সম্পদশালী হতে পারবে না ।
২১ । সহজে লোণ নেব না
বেশিরভাগ মানুষের অর্থনৈতিক জ্ঞান সীমিত হওয়ায়, কোন লোণ নেয়া উচিৎ ? কোন লোণ না নেয়া উচিৎ ? যেমন অনেক ক্ষেত্রেই স্টুডেন্ট লোণ ভাল ফল বয়ে আনে না, লোণ নিয়ে গাড়ি কেনা ধনির মধ্য সর্বশ্রেষ্ট বোকামি কিন্তু ক’জন বা বোঝে। অনেকসময় লোণে ফ্লাট কেনার চেয়ে যে ভারা থাকা লাভ জনক তা দেশের অনেক শিক্ষিত মানুষেই জানে না । এছাড়া কোন লোণ আগে এবং কোন লোণ পরে শোধ করা উচিৎ এসব বুঝতে পারে না ফলে দিন দিন লোণের চাপে চ্যাপ্টা হতে থাকে, যদিও টাকা ইনকাম করে কিন্তু অনেক সময় লোণের ঘোড়া ইনকামের চেয়ে বেশি দ্রুত দৌড়ানোর ফলে তারা লোণের সাথে পেরে ওঠে না ফলে আরো গরীব হয়ে পরে ।
২৩। অবশ্যই জরুরী তহবিলে কিছু টাকা জমা রাখব ।
– জীবন সবসময় স্বাভাবিক নয় । কখন কোন বিপদ সামনে আসবে কেও জানে না । রোগ ব্যাধি, সড়ক দুর্ঘটনার মত বিপদ যেকোনো মানুষের যেকোনো সময় হতে পারে । আপনি খুঁজ নিয়া দেখতে
২৪। ভবিষ্যতের কথা ভেবে সকল সিদ্ধান্ত নেব ।
যে মানুষ অনেক আয় করে এবং অর্থনৈতিক ভাবে খুব সচ্ছল হবার (কআবংসে)মানুষগুলো ও অনেক সময় দারিদ্রতায় ভুগে কারন তাদের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো ভবিষ্যতের হিসেব করে নয়। তারা চায় কি করে এখুনি খুব ভাল থাকা যায়? কি করে এখুনি যা যা দরকার সব পাওয়া যায় পরিনামে তারা কখনই অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে না । অনেক মানুষ বিয়ের পরেই এবং বাচ্চা হবার আগেই মাসে ৫০০ টাকা জমা করে রাখে তাদের বাচ্চার লেখাপড়ার খরচ হিসেবে, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু এমন কাজ করে না । যে মানুষগুলো এমন করে সমসময় ভবিষ্যতের চিন্তা করে কাজ করে তারা নিশ্চিত ভাবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করে । যে মানুষ অনেক আয় করে এবং অর্থনৈতিক ভাবে খুব সচ্ছল হবার কআবংসে মানুষগুলো ও অনেক সময় দারিদ্রতায় ভুগে কারন তাদের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো ভবিষ্যতের হিসেব করে নয় । তারা চায় কি করে এখনি খুব ভাল থাকা যায় ? কি করে এখনি যা যা দরকার সব পাওয়া যায় পরিণামে তারা কখনই অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে না । অনেক মানুষ বিয়ের পরেই এবং বাচ্চা হবার আগেই মাসে ৫০০ টাকা জমা করে রাখে তাদের বাচ্চার লেখাপড়ার খরচ হিসেবে, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু এমন কাজ করে না । যে মানুষগুলো এমন করে সমসময় ভবিষ্যতের চিন্তা করে কাজ করে তারা নিশ্চিত ভাবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করে ।
২৫। অবশ্যই জরুরী তহবিলে কিছু টাকা জমা রাখব ।
– জীবন সবসময় স্বাভাবিক নয় । কখন কোন বিপদ সামনে আসবে কেও জানে না । রোগ ব্যাধি, সড়ক দুর্ঘটনার মত বিপদ যেকোনো মানুষের যেকোনো সময় হতে পারে । আপনি খুঁজ নিয়া দেখতে পারেন দেশের ৯০% ইমারজেন্সি ফান্ড নেই । বাকি ১০% অনেক টাকার মালিক বলে হয়ত পার পেয়ে যায় কিন্তু এই বাকি ৯০% মানুষগুলো বিপদের দিনে নতুন করে ঋণের জালে আটকা পরে ফলে বড়োলোক সেতো কথার কথা আরও গরীব হতে থাকে ।
২৬। প্রতিদিনের খরচ লিখে রাখব।
সকলেরই মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমান টাকা বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয় । বিজনেসে খরচের হিসেব রাখা হলেও ব্যক্তি জীবনে এই হিসেবে কেউ সাধারণত রাখে না । হিসেব লিখে না রাখলে নির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব হয়ে পরে যে আসলে আপনি কোন খাতে মাসে কত টাকা ব্যয় করছেন? কোথায় আপনার ব্যয় বেশি হচ্ছে?কোথায় কম হচ্ছে?কোথায় আপনার খরচ কমনো উচিৎ?অথচ লিখে রাখলে আপনি পরিস্কার ভাবে দেখতে পাবেন যে কোথায় আপনি কি করতে পারবেন কিন্তু সাধারণত কেউ এই কাজটি করে না ফলে তাদের খরচ চলতে থাকে হাল ছাড়া নৌকার মত, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আর পাওয়া হল না ।
২৭। চাহিদা সীমিত করব।
মানুষের প্রয়োজন সীমিত কিন্তু চাহিদার শেষ নেই । অনেকে দুনিয়ায় যা কিছু আছে সব কিছুই তার প্রয়োজন মনে করে ফলে সে সব কিছুর জন্য দেদারছে টাকা খরচ করতে থাকে । বাস্তব জীবনে আসলে জগতের অনেক জিনিস আছে যা আমদের কখনই প্রয়োজন নাই, অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ছাড়াও জগতে হাজারো জিনিস আছে যা আমাদের মনের চাহিদা মাত্র যেমন, দামি গাড়ি, রলেক্সের ঘড়ি, মেক আপ, কসমেটিক্স, ডায়মন্ডের রিং, ঢাকা ক্লাবের মেম্বারশিপ, প্রাইভেট বিমান, হেলিকপ্টরে বিয়ে করা, সিঙ্গাপুরে হানিমুনে যাওয়া কখনই কারো প্রয়োজন না,এসব না হলেও একজন মানুষ জীবন পার করে দিতে পারে, এসব হল মানুষের মনের ক্ষুধা বা চাহিদা মাত্র । বর্তমানে এই শো অফের জগতে মানুষ এসবের পিছনে টাকা খরচ করে বড়লোকি দেখাতে গিয়ে বরং দিন দিন ফকির হচ্ছে ।
২৮। সব সময় বাজেট করে খরচ করব ।
প্রত্যেক মানুষের বাজেট করে (শোব) কিছু করা উচিৎ, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ বাজেট করে চলে না যারাওবা বাজেট করে তারা আবার ঠিক মত অনুসরণ করে না । প্রত্যেক মাসের খরচে হিসেব রাখা উচিৎ তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি কোন সেক্টরে কত টাকা খরচ করছেন । আপনি বাজেট করে খরচ করলে হুট হাট কোন সেক্টরে অযথা অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে পারবেন না । আপনি বেশি না ৬ মাস বাজেট করে খরচ করুন ফলাফল দেখে নিজেই চমকে উঠবেন । বেশি না ১ টি বছর পুরা বাজেট করে চলে দেখুন আপনার অনেক টাকা অযথা খরচের হাত থেকে বেচে যাবে আপনার সম্পদ বৃদ্ধি পাবে ।
২৯। খরচ করা শিখতে হবে
– টাকা সবাই খরচ করতে পারে এটা আবার জানার কি আছে ? কিন্তু না অনেক কিছু জানার আছে । প্রথমত অনেকেই জানে না তাঁর কি প্রয়োজন, কি কেনা উচিৎ , কি কেনা অনুচিত, কোথায় থেকে কিনলে ভাল জিনিস পাওয়া যাবে/ টিকবে বহুদিন, কোথায় কিনলে সাশ্রয়ী মূল্য কেনা যাবে , কখন কোন জিনিসের দাম কম থাকে ? কেনা কাটার অনেক কৌশল বা বিষয় বেশিরভাগ মানুষ জানে না ফলে অনেক সময় সঠিক দামে সঠিক জিনিস কিনতে ব্যর্থ হয়,কখনো বা বেশী দামে কিনে অর্থের অপচয় করে, কখনো বা খারাপ জিনিস কিনে টাকা নষ্ট করে ।
৩০। ভেবে চিনতে কিনব
– বেশিরভাগ মানুষ খাওয়া দাওয়া, কসমেটিক্স পোশাক আশাক ফ্যাশনার জুয়েলারির, টিভি, আসবাবপত্র, গাড়ির জন্য কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে যার মূল্য কখনোই বাড়ে না । এসব না কিনে মানুষ যদি বেশি বেশি স্বর্ণ বা জমি কিনত তবে ভবিষ্যতে তা তাঁদের জন্য অতিরিক্ত অর্থের কারণ হত ।
৩১। লোভ সংবরন করব ।
অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল হতে হলে আপনার অনেক স্বভাব বদলাতে হবে কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ যেভাবে আছে সেভাবেই চলতে চায় পরিবর্তন হতে অনিচ্ছুক । মন চাইলেই সাথে সাথে যা যা ইচ্চা সব কেনা যাবে না , অনেক কিছু কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে বেস অপেক্ষা করতে হবে । কিছু কিছু মানুষের অভ্যাস এতই খারাপ যে তারা পারলে ধার করে সব কিনবে কিন্তু কিনেই ছাড়বে, এই সব লাগবে টাইপের মানুষ গুলো কখনই বড়োলোক হতে পারে না ।
৩২। অযথা খরচের অভ্যাস পরিহার করব ।
দামি খাবার, দামি পোশাক দামি ফোন এসব কখনই প্রয়োজনীয় কিছু না এসব না হলেও আপনি সম্মানজনক ভাবে বচতে পারবেন । কিন্তু আমি অনেক মানুষকে চিনি যে মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন পায় কিন্তু ১ লাখ টাকা দামের ফোন ব্যাবহার করে, মাসে ফোনের পিছে খরচ করে আরও ২ হাজার টাকা । এছাড়া অনেকেই প্রতি বছর নতুন ফোন কিনে যা তার কোন দরকার নাই কিন্তু তবু নতুন ফোন নেয়া লাগবে । বুঝতেই পারছেন এমন লোকদের গরীব হওয়া কে ঠেকাবে হ্যাঁ ? কেউ না এরা কিয়ামত পর্যন্ত অভাবী হয়ে থাকবে অভাবী হয়ে মরবে । বেশিরভাগ ধনী মানুষ সামর্থ্য থাকা সত্তেও একটা লিমিটের মধ্য জীবন ধারন করে । টাকা থাকলেই সবাই ১০ কোটি টাকার গাড়ি কেনে না – ৩০০ কোটি টাকার মালিক বিপুল ধনসম্পদ ও সামর্থ্য থাকা সত্তেও মাত্র ১ কোটি টাকা দামের প্রাডো গাড়ি ব্যাবহার করে অথচ আমি নিজে এমন লোক কে চিনি যিনি ১ মাত্র সম্পদ ৫ শতক ধানের জমি বিক্রি করে বাইক কিনেছে – এমন লোকদের জন্য অভাব একমাত্র জীবন সঙ্গী ।
৩০ । আয়ের চেয়ে বেশি বায় কখনই করব না ।
ফকির হবার এক নাম্বার সমস্যা হল আয়ের চেয়ে বেশি বায় করা । এই কারনেই বেসিরভাগ মানুষ ও কোম্পানি দেউলিয়া হয় । এই সমস্যা থেকে বাচার একমাত্র উপায় হল আয় বুঝে বায় করা বা সামরথের মধ্যে জীবন ধারন করা কিন্তু বেসিরভাগ মানুষ এটা করতে বার্থ হয় । আয়ের চেয়ে বেশি বায় করার ফলে অনেক সফল সেলিব্রেতি থেকে শুরু করে কোটি কোটি টাকার বড় বড় কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায় । অনেক কোম্পানি শুধু বেশি খরচ করে বলে লাভজনক হউয়া সত্তেও বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হয় । অনেকেই দুর্বল লস হচ্ছে এমন কোম্পানি কিনে নার পরে প্রথম যে কাজটি করে সেটা হল কম্পানির খরচ কমান । আমার পরিচিত অনেক সফল বাবসায়ি মানুষ শুধু আয়ের চেয়ে বেশি খরচের কারনে এখন ধার দেনায় জরজরিত হয়ে করুন অবস্থায় পরেছে নাম বললে তাদের সম্মান থাকবে না তাই নাম প্রকাস করলাম না ।
৩১। পাসিভ আয়ের বেবস্থা করা –
ইংরেজিতে রিজিডুয়াল বা পাসিভ ইনকাম বলা হয়ে থাকে । আপনাকে এমন কিছু আয়ের পথ বের করতে হবে যেখানে আপনি না থাকলে বা নিয়মিত শ্রম না দিলেও প্রতি মাসে একটা ইনকাম যেন আসে । যেমন আপনার লেখা বই , আকবর লেখা হয়ে গেলে তা আজীবন আপনাকে টাকা দিতে থাকবে, এছাড়া ই বুক, অনলাইন কোর্স, ইউটিউব চ্যানেল, ভিডিও, অনলাইন ওয়ার্কশপ, লভভংস দেয় এমন শেয়ার , বাসা ভারা, জমি ভাড়া, নিজের ওয়েবসাইট থেকে মাসিক ইনকাম সহ এমন অনেক পাসিভ ইনকামের সুযোগ আছে যা আপনাকে খুজে বের করতে হবে এবং কাজে লাগাতে হবে ।
৩২। কয়েকটি আয়ের উৎস সৃষ্টি করা –
কখনই একটি মাত্র আয়ের উৎসের উপর নির্ভর করবেন না । বলা যায় না কখন কোন ইনকাম সোর্স বন্ধ হবে বা খারাপ করবে এটা কেউ খুব সহজে বলতে পারে না তাই আপনাকে কমপক্ষে ২/৩ টি আয়ের উৎস সৃষ্টি করতে হবে । এটা হতে পারে ২য় কোন জব নেয়া বা একটি বিজনেসের পাসাপাসি অন্য একটি বিজনেস শুরু করা । এই জন্নই বড় বড় গ্রুপ অফ কোম্পানি গুলো অনেকগুল সেক্টরে বিনিয়োগ করে থাকে ফলে ২/৪ টি সেক্টর খারাপ করলেও তারা মতের উপর খুব ভাল করে । বেক্তি জিবনেউ তাই আপনাকে সম্পদশালী হতে হলে এই নিয়ম অনুসরন করতে হবে । বিসসাস না হলে আপনার এলাকায় বা আশেপাশের খুব বড়লোকদের বেপারে খজ নিয়ে দেখুন দেখবেন সবসময় তাদের আকের অধিক খেত্র থেকে ইনকাম হয়ে থাকে ।
৩৩। বিনিয়োগ করতে হবে –
টাকা ইনকাম সবাই করতে পারে কিন্তু সঠিক ভাবে বিনিয়োগ সবাই করতে পারেনা বলেই অনেকের সম্পদ বৃদ্ধি পায় না ফলে সম্পদশালী হয়ে ওঠা আর হয় না । আপনার টাকা যখন আপনার জন্য টাকা ইনকাম করবে তখন আপনার সম্পদ দিন দিন শুধু বারতেই থাকবে । শুধু ইনকাম করার পরে খরচ না করে সঞ্চয় করলেই হবে না সবসময় আপ-নাকে বিনিয়োগ করতে হবে যাতে করে আপনার সম্পদ অলস বসে না থেকে উল্টা আপনার জন্য সম্পদ বৃদ্ধি করতে পারে । জমি, স্বর্ণ, আমাদের দেশের জন্য খুব ভাল বিনিয়োগ। শেয়ার মার্কেট টাকা বানানর জন্য ভাল হলেও দুরনিতির কারনে আমি শেয়ার মার্কেট থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেব । আসা করি উপরের এই ২৫ টি নিয়ম যে কোন মানুষ ফলো করলে সে সম্পদশালী হতে থাকবে । সকলের সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি ো বিপুল ধন সম্পদ কামনা করছি । এই টপিকের উপর আলচনা আখনেই শেষ ।