প্রশ্ন – লোভ কি করে আপনাকে ফকির করে জানেন- একটি গল্প ? লোভ থেকে বাচার উপায় ?
আমাদের দেশে কিছু ছেলের কাছে আমি সুনেছি যে তিক্তিকির মত দেখতে কিন্তু লম্বায় প্রায় ১ ফিত এমন এক জাতীয় প্রানি আছে যার নাম তক্ষক । জিবনে একটা ধরতে পারলে লাখ লাখ টাকা জিসারা জীবন বসে খেটে পারবে । আমি এই প্রানি নিয়ে উদাহরন সরূপ একটি গল্প বলি সুনেন –
এক গ্রামে গিরগিতিত্র মত দেখতে এমন অনেক প্রানি ছিল। এক চালাক লোক ঘোষনা দিলো সে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে এই তক্ষক (আসলে গিরগিতি বড় সাইজ ) কিনবে প্রতিতির দাম ১০ হাজার টাকা এবং এজন্য সে একজন মানেজার রাখল । পরের দিন গ্রামের লোকজন খেত খামারে কাজ বাদ দিয়ে আসে পাসের জঙ্গলে সবাই এই তক্ষক খুজতে লাগল । ১ মাস রাত দিন খুজে খুজে প্রায় হাজার খানেক তক্ষক ধরা পরল । একই ভাবে সে ওই জেলার প্রায় ১০ টি গ্রামে মানেজার রেখে প্রত্যেক গ্রামে আমন হাজার খানেক করে তক্ষক কিনল । মত খরচ হল ১০০০০০*১০০০০= প্রায় ১০০ কোটি টাকা ।
৩ মাস পরে উনি আবার ঘোষণা দিলেন যে তিনি আবার তক্ষক কিনবেন প্রতিতির দাম ২০ হাজার টাকা । কারন আগের তক্ষক তার সব বিক্রি শেষ নতুন তক্ষক লাগবে । এইবার লোকজন খুসিতে প্রায় পাগল হয়ে গেল । নিজ গ্রাম কোন তক্ষক নাই তারা তখন দুরের গ্রাম ও জঙ্গল থেকে ধরে এনে তক্ষক বিক্রি করতে লাগল । এইবার তার খরচ হল ১০০০০০*২০০০০= প্রায় ২০০ কোটি টাকা ।
৬ মাস পরে উনি ঘোষণা দিলেন তিনি এইবার আরও তক্ষক কিনবেন প্রতিতির দাম ৫০ হাজার টাকা । কিন্তু এজন্য তার প্রায় ৩০ দিন সময় লাগবে কারন সে আগের সব তক্ষক বিক্রি করে আসতে চায় । গ্রাম বাসি খুব খুসি হল । সদিন থেকেই আবার তক্ষকের খজে নেমে পরল কিন্তু তক্ষক খুজে পাওয়া যাচ্ছে না । এই দিকে মালিক এলাকার বাইরে সবাই মানেজারের সাথে জগা জগ করল যে তক্ষক খুজে পাওয়া জাচ্ছে না । এখন উপায় কি ? কোথায় তক্ষক পাওয়া যায় ? কেউ কেউ অনেক খজা খুজি করে ২/৪ টি করে তক্ষক পাচ্ছিল । কেউ আবার বেশি টাকা দিয়ে দুরের গ্রাম থেকে ৫/১০ টা করে কেনা শুরু করে দিল । কিন্তু আগের মত তক্ষক নাই সবাই তক্ষকের নেসায় পাগল হয়ে মানেজারের নিকট আসল । কি করা যায় ? উপায় কি ?
চতুর মানেজার তক্ষন ২/৪ জঙ্কে আলাদা করে দেকে নিয়ে বলল সুনেন আমার কাছে কিছু তক্ষক আছে অনেক দুরের এক জঙ্গলে । আপনি চাইলে আমি কিছু তক্ষক আপনাকে দিতে পারি , আমাকে প্রতি তক্ষক ৪০ হাজার করে দিতে হবে । আমার মালিক জানতে পারলে রাগ করবে তাই কাউকে বলতে পারবন না । টাকা নিয়ে আসবেন আগামি ডিন গত রাতে আমি আমার সেখান থেকে তক্ষক গুলো নিয়ে আসব । সবাইকে তোঁ দেয়া যাবে না কিন্তু আপনাকে আমি কমপক্ষে ৮/১০ টা দেব , কিন্তু সবাইকে কিন্তু আপনি বলতে পারবেন না । সে এই একই কথা সবাইকে আলাদা করে দেকে নিয়ে বলল কিন্তু সবাইকেই বলে দিল যে আপনি কাউকে বলবেন না । এবং তিনি কৌশলে একেক জঙ্কে একেক সময় আসার জন্য অনুরধ করল আবইং এই বলে মানেজ করল যে যদি আপনাকে দেয়ার সময় কেও দেখে ফেলে তাইলে তারা রাগ করবে যে আমি কেন শুধু আপনাকে দিলাম আর তাদেরকে দিলাম না । যেহেতু আমাকে এখানে থেকে চাকুরি করতে হবে তাই আমি কারো চোখে খারাপ বা কাউকে সন্ত্রু বানাতে চাই না । পরের দিন গত হলে রাতে বেলা গ্রামের লোকজন একেক করে সবাই টাকা নিয়ে আসতে থাকল , একজন ১০ টায় আসলে আরেকজন ১০ টা ২০ মিনিটে, একজন রাত ৩ টায় আসলে আরেকজন ৩ টা ৩০ মিনিটে এভাবে সারা রাত ধরে সবাই আসতে থাকল । যাদের কাছে টাকা ছিল না তারা ধার কর্জ করে, কেউ জমি বিক্রি করে, কেউ সুধের উপরে টাকা নিয়ে আসল । যাদেরকে ৮/১০ টা করে দেয়ার কথা ছিল তারা নিজেরাই মানেজারকে অনুরধ করে ৮/১০ তার বদলে বেশি বেশি তক্ষক কিনতে লাগল, একটু সামরথ কম এমন মানুষ গুলোও কেউ ১০০ এর নিচে কিনল না । । গ্রামের কয়েকজন অতি চালাক বেশি লাভের আসায় ২০/৩০ হাজার তক্ষক কেনার প্রস্তাব দিলে, আমতা আমতা করতে করতে চতুর ম্যানেজার খাচা থেকে তক্ষক গুলো বের করে বিক্রি করে টাকা বস্তায় ভরতে লাগল । এভাবে সারা রাত বিক্রি করতে করতে ভর হবার আগেই , সমস্ত তক্ষক বিক্রি কএ ফেলল । মত তক্ষক ২,০০০০০* টাকা ৪০,০০০= প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ।
সূর্য উঠার আগেই চতুর ম্যানেজার সমস্ত টাকা নিয়ে চম্পট । তার পরে ৭ দিন ১০ দিন এমনকি মাসের পর মাস চলে জেতে লাগল কিন্তু সেই তক্ষক কেনার জন্য আর কেউ এলো না । সহজ সরল গ্রাম বাসি দেরিতে হলেও আসত আসতে নিজেদের ভুল বুঝতে পারল কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না । ঋণের চাপে অনেকে আত্ত হত্তা করল, কেউবা বউ বাচ্চা সাথে নিয়ে গ্রাম ছেরে পালিয়ে গেল । ৬ মাসের মধ্য পুরো গ্রাম ফাকা , কথাও কোন মানুষ নাই । যেদিকে চোখ চায় শুধু গির গিটি আর গিরগিটি ।
এইবার বলি আসল ঘটনা ।
১। তক্ষক বলে আসলে কিছু ছিল না । প্রতারক চক্র টাকা দিয়ে প্রথমে ওই বড় আকারের গিরগিটি গুলই তক্ষক বলে কিনে নিচ্ছিল । গ্রামের কেউ কেউ এটা বুঝতে পারলেও নিজেদের লাভের জন্য লোভে পরে অন্ধ হয়ে বিষয়টি চেপে যাচ্ছিল এবং এই চক্র কে বোকা ভাবছিল ।
২। অরা ও তক্ষক ( গিরগিটি) গুলো বিক্রি না করে আসল দূরে এক জঙ্গলে জমা করে রাখছিল । আর গ্রামের লকজঙ্কে দেখাচ্চিল যে হা উনারা তক্ষক নিয়ে গয়ে বিক্রি করেন এবং লোকজন বিশ্বাস করা শুরু করেছিল ।
৩। একই কথা সবাইকে আলাদা করে বলে সে আসলে সবার কাছে আন্তরিক, জন্দরদি, উপকারি ও বন্ধু সাজার চেষ্টা করছিল, যাতে করে সবাই তাকে বিশ্বাস করে এবং টাকা নিয়ে আসে । প্রতারকদের প্রধান অস্ত্র প্রথমে বিশ্বাস অর্জন করা এই চক্র সেই খেত্রে সফল ছিল ।
৪। রাতের অন্ধকারে বিক্রির কারন ছিল, যাতে করে দূর গ্রাম থেকে আগে থেকে জমিয়ে রাখা গিরগিটি গুলো সবার চখের আরালে আনতে পারে, এবং তকা নিয়ে রাতা রাতি চলে যেতে পারে সেজন্য বেছে নিয়ে ছিল ।
৫। একেক সময় একেক জঙ্কে আসতে বলার মধ্য সে আসলে সবার মনের ভিতরে ঠুকতে সক্ষম হয়েছিল এবং সবাই শুধু নিজে অধিক লাভের আসায় বিষয়টি বিশ্বাস করে যাচ্ছিল । মানুষ লোভে পরলে সব বিশ্বাস করে । টাকার লোভ বড় লোভ ।
মানুষ লভে পরলে কি হয় ? কেন ধরা খায় ?
১। মানুষ লোভে পরলে তার হিতাহিত আন থাকে না ।
২। লোভে পরলে নিজেকে চালাক ও বুদ্দিমান ভাবতে থাকে ।
৩। কোন কিছু যাচাই বাছাই করতে গিয়ে সময় নষ্ট করতে চায় না । সুযোগ যদি হাতছারা হয়ে যায় সে ভয়ে ।
৪। মানুষ সবসময় নিজে বরলোক হতে চায় তাই অনেকে কোন সুজগকে খুব লাভজনক ও লোভনীয় মনে করলে সে সেটা কারো সাথে শেয়ার করে না ।
৫। অতি চালাক ও প্রতারক বেক্তিরা নিজেকে খুব চালাক মনে করে । নিজেদের চালাক ভেবেই শুরুতে গিরগিটি কে তক্ষক বলে গ্রাম বাসি চালিয়ে দিচ্ছিল এবং টাকা নিচ্ছিল ।
৬। লোভ হল নেসার মত , মানুষ আকবর কোন উপায়ে টাকার সন্ধান পেলে খুব সহজে সেই পথ থেকে ফিরে আসতে চায় না । এজন্য বনজঙ্গলের গিরগিটি ১০/২০ নয় আকবারে নগদ ৪০ হাজার করে টাকা দিয়েও কিনে নিয়েছিল এই জন্য যে –- বিনা পরিস্রমে মাত্র কয়েকদিন গেলেই প্রত্যেকটি তক্ষক থেকে ১০ হাজার করে আয় হবে এই জন্য ।
লোভ থেকে বাচার উপায় ?
১। কাউকে বোকা ভাব্বেন না ।
২। কাউকে ঠকানের চিন্তা করবেন না ।
৩। অসাভাবিক লাভ বিশ্বাস করতে যাবেন না ।
৪। খুব ভাল- ভাল না , যাচাই বাছাই না করে কোন কিছুই বিশ্বাস করতে যাবেন না ।
৫। সহজে বড়োলোক হবার চিন্তা মাথায় আনবেন না ।
৬। টাকা আয় করা কষ্টের কাজ খুব সহজে ইনকামের কথা কেউ বললেই তাকে সন্দেহ করবেন ।
৭। টাকা পয়সার খেত্রে জগতে কাউকেই অন্ধের মত বিশ্বাস করবেন না ।