প্রশ্ন- সম্পদশালী ব্যক্তিরা আসলে  কেমন ? সম্পদ সম্পরকে তাদের মতবাদ কি ?

আমাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটে অর্থ উপার্জনের নানা উপায় খুঁজতে। প্রায় সবার লক্ষ্য থাকে একটিই- কীভাবে ধনী হওয়া যায়। অনেকের মতে অর্থ এবং সেক্স- এ দুটি মানব জীবনের অন্তিম লক্ষ্য। তবে এদের মধ্যে অধিকাংশের মতে, সেক্স নয়, অর্থই সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয় । বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের মধ্য বেশ কিছু বিশ্বাস ও ধরন  রয়েছে।  বিশেষজ্ঞরা সম্পদশালী ব্যক্তিদের মধ্য নিচের  বিশ্বাসে ও  বৈশিস্থ গুলো খুজে পেয়েছেন   ।

১. টাকা খারাপ কিছু না  : অর্থের প্রতি অতি  লোভ ভালো নয়। তবে এটি জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এবং আরাম আনতে সাহায্য করে। ধনী ব্যক্তিরা তাদের অর্থের অশুভ দিকটি নিয়ে পড়ে থাকেন না। তারা পরিশ্রমের ফসলের সুফল ভোগ করতে চান।
২. আরো অর্থ চাওয়াতে দোষ নেই : আরো সেক্স করতে চাই- এখানে কেউ কেউ কুরুচিপূর্ণ মনোভাব এবং অশ্লীলতা  খুজে পেতে পারে। কিন্তু আরো অর্থ চাওয়ার মধ্যে তা নেই। ধনীরা তার বর্তমান অবস্থান থেকে আরো দূর ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করেন এবং সেজন্য আরো অর্থের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
৩. সত্যিকার সম্পদের জন্য আরো উপার্জন প্রয়োজন, সঞ্চয় নয় : আপনার প্রতি মাসের বাজেট থেকে কিছু অর্থ সঞ্চয় করা সম্ভব। কিন্তু তা দিয়ে সত্যিকার সম্পদ গড়ে ওঠে না। এ জন্য আরো বেশি উপার্জনের প্রয়োজন। নিজের সামর্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে নতুন নতুন সুযোগ খুঁজে বের করুন। সম্পদ গড়ে তুলতে চাইলে আরো উপার্জনের পথ বের করুন।
৪. ধনীরা চাহিদার নিচে থাকতে চান, ওপরে নয় : মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের সবচেয়ে বড় সমস্যা তারা তাদের চাহিদা ছাড়িয়ে আরো বেশি এগিয়ে যেতে চান। ফলে ধার-দেনায় পূর্ণ হয়ে ওঠে তাদের জীবন। কিন্তু ধনীরা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও চাহিদার নিচে থেকে জীবন কাটাতে চান। কারণ তাদের হিসেবটি হলো, প্রয়োজন মেটাতে খরচের চেয়ে তা বিনিয়োগ করলে আরো বেশি অর্থ আসবে।
৫. মস্তিষ্কের ওপর নির্ভর করা, ভাগ্যের ওপর নয় : বহু মানুষ লটারি কিনেন। তাদের মধ্যে গুটিকয়েক তা জিতে যান। কিন্তু ধনীরা এসব ভাগ্যের খেলায় আসেন না। ওয়ারেন বাফেটের মতো ধনীরা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে যান এবং মস্তিষ্ককে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসেবে মনে করেন।
৬. চিত্ত বিনোদনে নয়, শিক্ষা অর্জনে সময় ব্যয় : ধনী ব্যক্তিরা কোনো ট্যাবলয়েড পড়ছেন বা টেলিভিশনে সিনেমা দেখছেন এমন অবস্থায় পাওয়া যায় না। তারা সব সময় তাই পড়েন যার মাধ্যমে বিশেষ ক্ষেত্রে তার দক্ষতা বাড়বে। নতুন পথ খুঁজে বের করা এবং সমস্যা সমাধানের বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠতে সচেতন থাকেন ধনীরা।
৭. তারা ভাবেন এটি তার প্রাপ্য : সফল ধনী ব্যক্তিদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, তারা যা করেন তার জন্য নিজেকে যোগ্য মনে করেন। তারা ভাবেন, এটা তার প্রাপ্য। লক্ষ্য অর্জন হবে কি হবে না তা পরের বিষয়। কিন্তু তা পাওয়ার বিশ্বাস নিয়ে সামনে এগোলে ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। বরং পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৮। লোকের কথায় কান দেয় না – সম্পদশালী মানুষেরা কে কি বলল ? বা কে কি বলবে ? এসব ফালতু বিষয়ে সময় নষ্ট করে না । লোকের কথায় চলে না বলেই, বাজেট মত চলতে পারে যেখানে গরীব মানুষেরা লকে কি বলবে মনে করে ধার করে হলেও বড় রঙ্গিং টিভি কেনে আর আজিবন ঋণের বঝা মাথায় নিয়ে চলে  ।

৯। নিজের বুদ্ধিতে সিদ্ধান্ত নেন – সফল বাক্তিরা সিদ্ধান্ত নেয়া আগে অনেক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করার জন্য অনেক মানুসের সাথে আলচনা বা পরামরস করে ঠিকি কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় নিজে যেটি ঠিক মনে করেন সেটাকেই সঠিক মনে করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন  ।

১০- প্রচণ্ড বুদ্ধিমান – সম্পদশালী লোক সবসময় অত্তান্ত মেধাবি হয়ে থাকে তা শে লেখা পরা জানুক আর নাই জানুক  । কারন যারা বকা তারা  পারিবারিক ভাবে সম্পদের মালিক হন তারা বুদ্ধিমান না হলে সেই সম্পদ ধরে রাখতে বার্থ হন, আর যারা নিজে মেধা খাটিয়ে কটি কটি   টাকার মালিক হন তাদের মেধা সম্পরকে বলার অপেক্ষা থাকে না  ।

১১। আশাবাদী বা পজেটিভ/ সুখি  –  সম্পদশালী অনেক মানুসের মধ্য জরিপ করে দেখা গেছে যে প্রায় সকল সম্পদশালী মানুষেরাই অত্তান্ত পজেটিভ মন মানসিকতার । টাকা সমসময় মানুস্কে সুখি করে না কিন্তু সুখ মানুষকে অধিক টাকা আয় করতে অনুপ্রানিত করে  । পজেটিভ মন মানসিকতা মানুষকে সমস্যা সমাধান করতে সাহাজ্জ করে ।

১২। বহুমুখী ইনকাম করে – এরা কখনই ২/১ টি উপায়ে টাকা ইনকাম করে না, প্রায় সকল ধনী মানুষেরাই অনেক গুলো উপায়ে টাকা ইনকাম করে থাকেন । এরা একটি মাত্র আয়ের উৎসের উপর কখনই নিরভর করে না ।

১৩। রিয়েল এস্টেট এ বিনিয়োগ – দুনিয়ার  প্রায় ৫০% এর বেশি  সম্পদশালীদের মধ্য এই জিনিসটা অত্তান্ত কমন, প্রায় সকলেই রিয়েল এস্টেট মানে , বাড়ি, ফ্লাট, জমি এসবের মধ্য বিনিয়োগ করে থাকেন ।

 

 

14। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার ক্ষমতা – জব বা বিজনেস লাইফে আকেক সময় আকেক সমস্যার আবিরভাব হয়, এই মানুসগুল সেসকল পরিস্থিতি ঠাণ্ডা মাথায় সমাধান করে , নিজেকে যে কোন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে পারে । কোন বিপদ সামনে আসলে অস্থির না   হয়ে বা কন রকম প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে যা করলে সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে সেটাই  করে ।

 

১৫। মানুষের সাথে সুসম্পর্ক বা যোগাযোগ – এরা খুব সহজে যে কোন মানুষের সাথে মিসতে পারে, অনেক সময় সামান্য ক্ষতি হলেও সেটা মেনে নিয়ে অপরের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে । বছরের বেস বড় একটা সময় তারা নেটওয়ার্কিং এর পিছনে বায় করে ।

 

১৬। বাবসায়ি – জগতে যারা খুব বেশি টাকার মালিক তাদের প্রায় সবাই বাবসায়ি । ২/৪ জন অন্ন পেসার থাকলেও বিলিয়নিয়ার তালিকায় তাদের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য । দুর্নীতি, ঘুষ, মানিলন্দারিং , কালো টাকা বা যেকোনো অসদ উপায়েই কেউ টাকার মালিক হক না বিলিয়নিয়ার এর তালিকায় সাধারণত তারা কখনই আসতে পারে না , অর্থাৎ সম্পদশালীদের দলে প্রায় সবাই বাবসায়ি  ।

 

১৭। যা করে ভালবেসে করে – বিজনেস জব বা যে জিনিসটাই তারা পেশা হিসেবে করে না কেন তারা মন থেকে ভালবেসে সেতা করে, অবশ্য মন থেকে ভালবেসে করে বলেই সেই সকল খেত্রে তারা সফল হয় বা সাফল্য লাভ করে ।

 

১৯। উদার  – এরা শুধু টাকা আয় করে না সমাজের জন্য সেই টাকা খরচ ও করে, ফ্রি চিকিৎসা, পরিবেশ উন্নয়ন,  শিক্ষা বৃত্তি, দারিদ্র দুরি করন মুলক সহ নানা রকম জনকল্যাণ ও সেবা মুলক কাজে নিজেদের অর্থ বায় করে থাকে । প্রায় ৯৯% অতি সম্পদশালী মানুষেরা সবসময় সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে । এরা যে সবসময় টাকা দান করে তা নয়, অনেক সময়, বিনামুল্লে চ্যারিটি অনুষ্ঠান করে দেন, কখন বিনামুল্লে সেবা বা পরামর্শ ও দিয়ে থাকেন  ।

 

২০। স্মার্ট ক্রেতা – টাকা আর আবেগ এরা একসাথে রাখে না । প্রয়োজনের চেয়ে কম খরচ করে, খরচ করার আগে সঞ্চয় করে, সামরথের চেয়ে বেশি খরচ করে না ।   হুট হাট পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া এবং অপ্রয়োজনীয় কোন কিছু এরা কেনে না । কেনার সময় অনেক যাচাই-বাছাই, ও তুলনা করে তবেই কেনে । মন চাইলেই অনেক দামি গাড়ি, বা কারাবিয়ান এ অবকাশ কাটাতে চলে জান না । সবসময় সামরথের মধ্য থেকে ভগ বিলাস সবি করে । পার্সোনাল বা বিজনেস উভয় ক্ষেত্রেই এরা বাজেট করে খরচ করে যদিও ইনকাম বারার সাথে সাথে মানুষের খরচ করার প্রবনতা বেরে যায় । খরচ কমিয়ে আয় বাড়ানোর ব্যাপারটা সকল সম্পদশালী মানুষের মধ্যই দেখা  যায়  ।

 

২১। কঠোর পরিশ্রমী – যে যে সেক্টর থেকেই সম্পদের পাহার গরেছেন তাদের প্রায় সকলেই অত্তান্ত পরিশ্রমী এবং কোন কাজ দেখে কখনই পিছপা হয় না । কাজের কোন বাছবিচার কখনই করে না , বাসায় বা বিজনেসে যখন যে কাজ করতেই হবে বলে মনে হয় সাথে সাথে করে ফেলে ।  বড়লোকদের বিলাসি জীবন যাপনের দৃশ্য দেখে তাদের শুধু ভগ বিলাসি মনে হলেও তারা অত্তান্ত কাজের লোক, কাজের মানুষ । আমাদের এলাকার কোটিপতি মাছ বাবসায়ি যিনি মাঘ মাসের কন কনে শিতের মধ্য রাত ১২ টায় পুকুরের মধ্য নেমে পরেন যা অনেক বেকার মানুষেই করতে চাইবে না । এরা নিজ থেকেই কাজ করে কেউ করতে বললে করে এমন কিছু না ।

 

 

২২. সবসময় দীর্ঘ মেয়াদি চিন্তা করে : সম্পদসালিরা প্রায় সবাই যে কোন লং টার্ম রিলেসন বা বিবাহিত হয়ে থাকে  । এরা হুট হাট প্রতিদিন ফেসবুক প্রফাইল পিক পরিবরতন করে না । কোন জিনিস কিনলে সহজে বিক্রি করতে চান না , এমনকি অনেক পুরাতন হলেও ব্যাবহার করতে থাকেন ।

 

২৩। ধরযশীল – সম্পদশালীদের মধ্য এই গুনটি অত্তান্ত কমন । এই কারনেই তারা কোন কিছুতে তারা হুরা করে না, বিজনেসে বা পারিবারিক জিবনে কোন লস হলে বা বিপদ আসল তারা ভরকে যায় না , ধরজ ধারন করে এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখে ।

 

২৪। ঝুকি নেয়ার সাহস থাকে – বিজনেস মানেই ঝুকি, লস দেয়ার হিম্মত না থাকলে তারা কখনই লাভজনক কোন প্রজেক্ট বা বিজনেসে বিনিয়োগ করতে পারত না । এরা জানে লস হতে পারে তবু হাসিমুখে সেটা মাথায় নিয়ে বিনিয়োগ করে ফেলে । টাই প্রায় সকল সফল মানুষই ঝুকি নিতে ভয় পায় না তবে হা ঝুকি নেয়ার আগেই তারা হিসেব করে ফেলে ঝুকির  বিপরিতে লাভ কেমন ? যদি লাভ বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে তবে বেশি ঝুকি নিতে পিছপা হয় না । তবে সামান্য লাভের জন্য বর রিস্ক নেয়ার মত বকা এরা নয় ।

 

২৫। উদ্দেশ্য – উদ্দেশ্য ছাড়া সম্পদশালী ও সফল মানুষেরা কিছুই করে না, এবং যারা সম্পদশালী হতে চান তাদের জন্য এই গুন্তি অতিব জরুরী  । উদ্দেশ্য ছাড়া কোন কাজ করার মানসিক সক্তি আপনি পাবেন না । তারা একেক সময় একেক উদ্দস খুজে পায় এবং সেতা বাস্তবায়ন করার নেসায় আকের পর আক কাজ করে যেতে থাকে । জিবনের একটা পরযায়ে তারাও বুঝতে পারে যে এত বেশি সম্পদ আসলে কোন দরকার নাই আর জীবন খুবি অল্প দিনের আর টাই তারা তখন মানবসেবায় বা জনকল্যাণে কাজ করতে থাকে , নিজের সম্পদ খরচ করতে থাকে মানুসে জন্য  ।

 

 

 

২৬। বিনয়ি – অতিব সম্পদশালী বাক্তিগন কখনই অহংকারি হন না তারা বিনয়ি হন , কারন যারা অহংকারি তারা যথেষ্ট মেধাবি না – আর মেধাহীন মানুষ কখনই সম্পদের পাহার গরতে পারেন না । বিসসাস না হলে ২/৪ হাযার কটি টাকার মালিকদের সাথে আকদিন কথা বলে দেখুন তারা কতটা নিরহংকারি । এ কারনেই আপনি ঢাকা শহরের অনেক দারোয়ানের সাথে কোন কিছু জানতে চেয়ে অনেক সময় ঠিক মত কথাও বলতে পারবেন না যদিও সেই বারির মালিকের সাথে কথা  বলে দেইখেন শে নিসছয় ওই দারোয়ানের মত অত ভাব নেবে না ।  আর যদি কোন  ২/৪ কোটি টাকার মালিক  খুজে পান যে বড্ড বেশি অহংকার নিয়ে চলছে বুঝে নেবেন এই টাকা তার নিজের না , এই টাকা শে নিজে উপারজন করে নাই, হয়ত দুর্নীতি বা উত্রাধিকার সুত্রে পাওয়া , আর এই অহংকারি মানুসদের  জন্য পতন অনিবার্য ১০/২০ বছর পরে দেখবেন তারা কথায় থেকে কথায় নেমে আস ।

 

২৭। জগতের সব খবর রাখে – অতি সম্পদশালী মানুষেরা দুনিয়ার কথায় কি হচ্ছে সব খবর রাখার   চেষ্টা করে । খবর পরা বা দেখা, ইন্টারনেট বাউজিং ,  বই পরা, ভ্রমন এসব করে সমসময় নিজেকে আপডেট রাখে । প্রতিজগিতার এই জুকে নিজেকে আপডেট না রাখার কোন বিকল্প নাই । টাই এরা প্রচুর সময় বেয় করে এসবের জন্য  ।

Join The Discussion

Compare listings

Compare