ব্যান্ডইং কিরকম শক্তিশালী ? ১৩১
ধরেন আপনি একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে চাইনিজ খেতে গেলেন। প্রিয়তমাকে নিয়েই। ওয়েটার আইসা মেন্যু দিল। ওদের স্পেশাল আইটেম
– স্পেশাল পি আমেরিকানাস স্যুপ
.
পরিবেশন করা হল। সুপের বোলের নীচে চুলাও ফিট করা। গরম গরম ধোয়া উড়ছে। রিতীমত হামলে পড়ে খেয়ে নিলেন। কেমন লেগেছে। মজা পেয়েছেন? কনগ্রেটস। এইমাত্র আপনি তেলাপোকার স্যুপ খেলেন। যান বমি করে আসেন।
.
ব্যাপার না, সবই ব্র্যান্ডিং। পি আমেরিকানার জায়গায় , তেলাপোকার স্যুপ লেখা থাকলে খাওয়ার আগেই বমি করে দিতেন। ব্যাঙ্গের ফ্রাইও পাওয়া যায়। ফ্রগিস বাইটস। ডাইরেক্ট ফ্রগ লিখলে কেউ খাবেনা। ফ্রগ মিয়ারে কামড়া লিখলে চোখ ধাধায় ওঠে।
.
কাহিনী একটু ওলট পালট করে একই ঘটে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের বেলায়। ঠোঙ্গার মধ্যে এক দুইটা আলু কাইটা চিকন চিকন যা দেয়, সেটার নাম ফ্রেঞ্চ ফ্রাই দেইখা পকেট থেকে ষাট টাকা বের কইরা দেই। যদি লেখত আলুভাজি?
– ওই মিয়া ফাইযলামি করেন? আমার খাটের নীচে কত আলু
বাঙ্গালীর চিরচেনা এই আলুভাজিকেই বিদেশীরা টেস্টিং সল্ট মিশাইয়া ব্র্যান্ডিং কইরা সারাবিশ্বে ছড়াইয়া দিল যেটা খাইতে খাটের নীচে আলুর ক্ষেত ফালাইয়া আমরা এসি ক্যাফেতে যাই।সবই আইডিয়া,সবই ব্র্যান্ডিং। আলুর মইধ্যে দেশের ব্র্যান্ডিং।
এইতো দুই বছর আগের ঘটনা। এক বিদেশী বন্ধু ঢাকায় শুটকির ভর্তা খাইয়া উহ আহ করতে করতে যা বলল তা হল
” হোয়াট এন থ্রিলিং ফুড।ইউ বেঙ্গলিস আর রিয়েলি ব্রেভ… ”
.
এই শুটকি টাকে মেইন অ্যাট্রাকশন বানিয়ে একটা আন্তর্জাতিক চেইন রেস্টুরেন্ট খোলা যায়। ওরা থ্রিলের পাগল। ভাবতেই ভাল লাগে একদল আমেরিকান কিংবা ব্রিটিশ বাংলা শুটকিজ – দা আল্টিমেট থ্রিল নামক চেইন রেস্টুরেন্টে বসে শুটকি খাচ্ছে আর ঝালের চোটে উহ আহ করতে করতে বলছে ” হোয়াট আ থ্রিলিং ফুড।বাংলাদেশীজ আর রিয়েল ব্রেভ… ”
.
দেশের নামটাই ছড়াবে। লাভ নাই অবশ্য।আমাদের দেশে আইডিয়ার কদর নাই। আছে রুপের কদর মেক আপের কদর , কে কত বেশী আহাম্মক হইতে পারে সেইটার কদর।
.
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টারে একপাল আহাম্মকের পেছনে কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট হইতে পারে, গ্ল্যামারের ব্যাপার।
রিসার্চ এমড ডেভেলপমেন্টে কয় টাকা যায়?
কিন্তু কোন ক্ষুদে বৈজ্ঞানিক যদি তার লো কস্ট সোলার ফুয়েল্ড গাড়ির প্রোটোটাইপ টা নিয়ে কোন কর্পোরেট কোম্পানীর হেড অফিসের সামনে দাঁড়ায় তাহলে তারে গেট পার হইতেই দিবেনা। পাগল মনে কইরা দৌড়াইতেও পারে… কে খবর রাখে টিনের চালের নীচে বসে সায়েন্স পাগল দরিদ্র মেয়েটা ড্রোনের মডেল আঁকে
.
সমস্যা এখানেই। আমরা আধুনিক হচ্ছি আগাইতেসি। রুপে গ্ল্যামারে কিন্তু গুণে না। সবাই ওই রুপের পিছনে ছুটে।
.
১৯৮৩ তে চাইনিজ শান মিং নামক এক পাগল আই টি কর্মকর্তা চীনের তখনকার প্রেসিডেন্ট লি জিয়ান কে যখন লো কস্ট আইটি পার্টস এক্সপোর্টিং নামক কমদামী ইলেক্ট্রিক পার্টস উতপাদন আর রপ্তানীর অবাস্তব একটা প্রোজেক্ট দেখায় একই সময়ে চীনা সিনেমা ইন্ড্রাস্টী কে উন্নত করে হলিউডের মত একটা করার একটা প্রোজেক্টও দেখান হয়। দুইটাই বিগ বাজেটের। যেকোন একটা প্রজেক্ট অনুমোদন দেয়া যাবে
.
সেদিন লি জিয়ান সিনেমা বাদ দিয়ে ,ঐ অবাস্তব কম দামী ইলেকট্রিক পার্টস উতপাদনের প্রোজেক্টে ইনভেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা ৬ হাজার টাকায় অ্যান্ড্রোয়েড ফোন ইউজ করি আর চীন আমেরিকার সাথে পাল্লা দেয়।
.
বাই দা ওয়ে, রুপের বাহার দিয়ে কি হয় রে পাগলা, কিছু হয়না। ব্রেইন ইজ দা নিউ সেক্সি
Nuruzzaman Shawn
Collected from md Meredi hasan