সুখী মানুষের গল্প    ৮৫

সুখী মানুষের গল্প    ৮৫

প্রতিদিন সকালে পার্কে হাঁটতে আসেন বয়স্ক একজন মানুষ, সবসময় হাসিমুখ, বেশ বিনীত ব্যবহার। সবার সাথে মিষ্টি করে হেসে কথা বলেন। খাবারের দোকানে বিল দেওয়ার সময় প্রতিদিন দোকানদারকে সৌজন্যবশত ধন্যবাদ জানান মানুষটি, কখনো দেখিনি দোকানীকে প্রতিদানে ধন্যবাদ জানাতে। খিটখিটে মেজাজের দোকানীটির কাছে ভাল ব্যবহার কেউ প্রত্যাশা করে না, তাই এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।

কিন্তু আমার অবাক লাগলো বুড়ো মানুষটি দিনের পর দিন এই সৌজন্যবোধটুকু বজায় রেখে চলেছেন কেন সেটি ভেবে। আমার সাথে কেউ এমন রূঢ় ব্যবহার করলে আমি দ্বিতীয়বার সৌজন্যের ধার ধারতাম না! তাই কৌতূহল সামলাতে না পেরে জিজ্ঞেস করে বসলাম মানুষটিকে, “আচ্ছা এই দোকানী এত অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আপনি তবু মিষ্টি ব্যবহার কীভাবে করেন তার সাথে?”
মানুষটি একগাল হেসে বললেন, “আমাদের সৌজন্য, ভালবাসা, সুখ এই বিষয়গুলো কি অন্য কারো হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত? তুমি যদি মন থেকে অনুভব করো নিজেকে সুখী হিসেবে, পৃথিবীর কারো সাধ্য নেই সেটিকে বদলাতে পারে! আমি তাই সবার সাথে সমানভাবে হাসিমুখে কথা বলে যাব, সমান মর্যাদা দেবো, মানুষটি প্রতিদানে কী করলো সেটি আমার কাছে মুখ্য নয়।”

তুমি কী করবে সেটি যদি আরেকজন ঠিক করে দেয়, আরেকজনের প্রতিক্রিয়ার উপর তোমার সুখ-দুঃখ ভাল-মন্দ নির্ভর করে তবে এর চেয়ে দুর্ভাগা আর কে হতে পারে? জীবন প্রতিযোগিতার, প্রতি মুহূর্তে, প্রতি নিশ্বাসে। তবে প্রতিযোগিতাটি অন্যদের সাথে নয়, এটি একান্তই নিজের সাথে, প্রতি পদক্ষেপে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার নিরন্তর প্রেরণায়।

লিখেছেন – যূথী আফরিন

Join The Discussion

Compare listings

Compare